টোবা টেক সিংহ
সাদাৎ হাসান মান্টো
(ইংরিজি অনুবাদ থেকে আবার বাংলায় অনুবাদ করলাম, ইংরিজি অনুবাদটি এইখানে পড়তে পারবেন, https://wordswithoutborders.org/read/article/2003-09/toba-tek-singh/ , এছাড়াও অবশ্য আরো অনেক অনুবাদ আছে, আমিও বাংলায় একটা করে রাখলাম)
এ গল্প দেশভাগের দুই কি তিন বছর পরের ।
পাকিস্তান এবং ভারত, উভয় দেশের সরকার স্থির করলেন যে যেমন ভাবে তাঁরা দু দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় করেছেন, ঐরকম ভাবে দু দেশের মধ্যে তাঁরা উন্মাদ বিনিময় করবেন। মানে, ভারতের পাগলাগারদের মুসলমান পাগলদের পাকিস্তানে পাঠানো হবে আর পাকিস্তানের পাগলা গারদে যে সমস্ত হিন্দু ও শিখ সম্প্রদায়ের পাগল, তাঁদের ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এইরকম সিদ্ধান্তের কিঠিক কি ভুল কেই বা জানে, তা সে যাই হোক, দু দেশের সীমানায় উচ্চস্তরীয় সব সমাবেশের পরে, একটি দিন স্থির করা হল, যেদিন উন্মাদ বিনিময় করা হবে। সেই মত সব কাজকর্ম সারা হল, সই সাবুদ সম্পন্ন হল। ভারতের তরফে বলা হল যে যে সমস্ত মুসলমান পাগল, তাদের মধ্যে যাদের বাড়ির লোকজন বা আত্মীয় স্বজন ভারতে থাকেন, তাঁরা ভারতে থাকতে পারবেন, আর বাদবাকীদের ওপারে পাঠিয়ে দেয়া হবে। এখন পাকিস্তান থেকে তো প্রায় সব হিন্দু আর শিখ ছেড়ে চলে গেছেন, কাজেই অ-মুসলমান পাগলদের সে দেশে রেখে দেওয়ার আর প্রশ্নই ওঠে না। সব হিন্দু আর শিখ পাগলদের পুলিশী নিয়ন্ত্রণে সীমানার ওপারে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
আমরা অবিশ্যি জানি না যে ওদের দেশে মানে ভারতে কি হল, তবে এখানে লাহোরের পাগলাগারদে যখন উন্মাদ বিনিময়ের খবরটা পৌঁছল, পাগলদের মধ্যে তাই নিয়ে সাংঘাতিক উত্তেজনা আর আলাপ আলোচনা চলতে লাগল। এদের মধ্যে এক মুসলমান পাগল ভদ্রলোক ছিলেন, তিনি আজ প্রায় ১২ বছর হল প্রত্যেক দিন “জমিদার” নামে খবরের কাগজ নিয়ম করে পড়তেন। তাঁকে তাঁর এক বন্ধু…